মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘ তিন দশক পরে ধলেশ্বরী নদীর তীরে নবাবগঞ্জের কৈলাইল ইউনিয়নের দৌলতপুর এলাকায় শুক্রবার স্থানীয় ও প্রবাসীদের উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা এই বাইচ প্রতিযোগিতায় প্রায় ২০টির বেশি নৌকা অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ‘শেখ খোকন’ মামা-ভাগিনা’ কৈলাইল তুফান মেইল’ ছিল অন্যতম। শেখ খোকন প্রথম স্থান লাভ করে বিজয়ী হয়।
নৌকা বাইচে স্থানীয় বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এবং প্রবাসীরা অংশগ্রহণ করেন। নদীর তীরে উপস্থিত হাজার হাজার দর্শক প্রতিটি দৌড় উপভোগ করে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরী হয়। নৌকা বাইচের মধ্য দিয়ে শুধু বিনোদন নয়,স্থানীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে এলাকাবসী। তিন দশক পরে ধলেশ্বরী নদীতে শীতের আগমনীতে এ নৌকা বাইচ যেন মানুষের মনে বাড়তি আনন্দের সঞ্চার করেছে।

প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লায়ন আবু শফিক খন্দকার। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস সালাম। উদ্বোধক ছিলেন ঢাকা জেলা দক্ষিন ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম নিরব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা নৌকা বাইচের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, নৌকাবাইচ কেবল ক্রীড়া নয়, এটি কমিউনিটির মধ্যে ঐক্য ও বন্ধন গড়ে তোলার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। স্থানীয় ও প্রবাসীরা বার্ষিক এই আয়োজনকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন দেন এবং ঐতিহ্যকে ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি জানান।
নৌকাবাইচে ১০ টিরও বেশি নৌকা অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি নৌকায় সাধারণত ২০থেকে ২৫জন মাঝিমাল্লা ছিলো। নদীর স্রোত ও প্রতিযোগিতার চাপ মোকাবিলা করতে গিয়ে নৌকার মাল্লাদের উল্লাস দর্শকদের মুগ্ধ করে। প্রতিটি দৌড়ে নদীর স্রোত, হাওয়ার দমকা এবং মাঝিদের উত্সাহময় চিৎকার মিলিয়ে একটি অনন্য রকম উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। স্থানীয় শিল্পীরা গান, নৃত্য ও পারফরম্যান্সের মাধ্যমে নৌকা বাইচকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেন। কিছু প্রতিযোগী নৌকায় বিশেষ পোশাক ও সাজসজ্জা ব্যবহার করেন, যা দর্শকদের আকর্ষণ বৃদ্ধি করে। দর্শকরা নৌকার প্রতিটি দৌড়ে চিৎকার ও উল্লাস করে পুরো অনুষ্ঠানকে মুখরিত করে তোলে।

প্রধান অতিথি আবু শফিক খন্দকার বলেন, “নৌকা বাইচ আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অংশ। এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মধ্যে ঐতিহ্য ও কৃষ্টিকে ধরে রাখে। আমরা আশা করি ভবিষ্যতেও এটি নিয়মিত ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসতিয়াক চৌধুরী, সাজ্জাদ শরীফ, মো. মুন্নাসহ স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তি।